ফ্রান্সে মহানবী (সাঃ) ব্যঙ্গচিত্রের প্রতিবাদে বাংলাদেশ আহলে সুন্নাতু ওলজামাতের বিক্ষোভ
গাজী জাহাঙ্গীর আলম জাবির: প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নবী ও রাসূল। দয়াল নবীর জীবনকর্ম ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সব ধর্মের অনুসারীরাই তাঁকে শ্রদ্ধা ও সম্মান করেন। কিন্তু সম্প্রতি ফ্রান্সে নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন এবং এর সমর্থনে সে দেশের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো ফ্রান্সের বেয়াদবিমূলক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সহ সারা দেশে তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ – মানববন্ধন ও আন্দোলন চলছে।
ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ ফ্রান্সের পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। ফ্রান্স নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শনের জন্য সরকারিভাবে প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত দেশটির সঙ্গে সকল ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্জনের দাবি করেন এবং পাশাপাশি বাংলাদেশে নিয়োজিত ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারেরও দাবী তোলেন।

প্রাণের নবীজিকে নিয়ে ফ্রান্সের ধৃষ্টতার প্রতিবাদে আজ (৭ নভেম্বর) শনিবার বেলা ১১ টায় রাজধানী ঢাকার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেইটে আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত বাংলাদেশের কর্মসূচীতে সুন্নি জনতার ঢল নামে। ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারায়ে তাকবি, নারায়ে রিসালাতের ধ্বনির পাশাপাশি ফ্রান্স ও নবী- অলির শানে অশালীন- বেয়াদবিমূলক অপরাধ সহ্য করা হবে না বলে বিভিন্ন শ্লোগানও দিতে দেখা যায়।
গণজমায়েতে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মহাসচিব আল্লামা এম এ মতিন বলেন, ফ্রান্সের সাথে সকল প্রকার কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করুন। তাদের সকল পণ্য বর্জন করুন। তিনি, ঈমানী দাবিতে তরিকতপন্থী-সুফি ঘরনার সুন্নি জনতার সুশৃঙ্খল ও নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে সহযোগিতা করার জন্য সরকার, প্রশাসন ও সচেতন দেশবাসীর প্রতি ধন্যবাদ জানান। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত বাংলাদেশের গণজমায়েত ও বিক্ষোভ সমাবেশ পূর্বঘোষিত কর্মসূচি মোতাবেক গতকাল বেলা ১১ টা থেকে বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে সমাবেশ শুরু করে।
এর আগে ভোর — থেকে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, যুবসেনা ও ছাত্রসেনার কর্মীরা এখানে জড়ো হতে থাকে। বেলা ১১ টায় গণজমায়েত জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বিজয়নগর, প্রেসক্লাব, পল্টন, গুলিস্তান, দৈনিক বাংলার মোড়, মতিঝিল পর্যন্ত প্রচুর মানুষের সমাগমের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। আহলে সুন্নাত ওয়াল জমা’আত বাংলাদেশের চেয়ারম্যান শায়খুল হাদিস আল্লামা কাজী মঈনুদ্দিন আশরাফীর সভাপতিত্বে ও নির্বাহী মহাসচিব উপাধ্যক্ষ মুফতি আবুল কাশেম মোঃ ফজলুল হকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে মহানবী দঃ এর শানে অবমাননার জন্য ফ্রান্স সরকারকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে,অন্যথায় বাংলাদেশে সে দেশের দূতাবাস বন্ধ সহ ৫ দফা দাবি তোলে ধরা হয়। সমাবেশে অধ্যক্ষ আল্লামা স উ ম আবদুস সামাদ, মহানবী দঃ এর অবমাননার ঘটনায় সরকারের নীরবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
তিনি বলেন, ফ্রান্সে প্রিয়নবী কে অবমাননার প্রতিবাদে বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি প্রতিবাদ হয়েছে। অথচ সরকার নীরব। এই নীরবতার রহস্য কী সুন্নি জনতা জানতে চায়। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন,আহলে সুন্নাত মহাসচিব আল্লামা সৈয়দ মসিহুদৌল্লা, নির্বাহী চেয়ারম্যান, আল্লামা আব্দুল বারী জেহাদী, মাওলানা আবু ছুফিয়ান আলকাদরী, ডঃ হাফেজ হাফিজুর রহমান, অধ্যক্ষ ডঃ আফজাল হোসাইন, সৈয়দ মুজাফফর আহমাদ, মাওলানা হাফেজ ওয়ালি উল্লাহ আশেকী, যুবসেনার কেন্দ্রীয় সভাপতি গোরাম মাহমুদ ভূইয়া মানিক, মুফতি গিয়াস উদ্দীন তাহেরী, মুফতি এহসানুল হক মুজাদ্দেদী, আবদুল হাকিম, সৈয়দ হাসান আর আযহারী, আব্দুল মোস্তফা রাহিম আল আযহারী, আহমাদ রেজা ফারুকী, ডাঃএস এম সারওয়ার, মাছুম বিল্লাহ মিয়াজী, মাওঃ আমিনুল ইসলাম আকবরী।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, আলহাজ্ব মোহাম্মদ ইকবাল, মাওলানা মহিউদ্দিন, মাহমুদ মোস্তফা জিলানী, ছোলাইমান খান রাব্বানী, অধ্যাপক নুরুল আলম, এডঃ ইসলাম উদ্দিন দুলাল, মহিউদ্দিন হামেদী, আবু নাছের মোহাম্মদ মুছা, গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির, অধ্যাপক রিদওয়ান আশরাফী, নুরুল্লাহ রায়হান খান, ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক ইমরান হোসাইন তুষার।
গনজমায়েত ও বিক্ষোভ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে নেতাকর্মীরা ফ্রান্স বিরোধী প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, নিয়ে পল্টনমোড়, দৈনিক বাংলা, জিরো পয়েন্ট, বিজয়নগর অবস্থান নেয়। তখন বিক্ষোভ সমাবেশ রুপ নেয় জনসমুদ্রে।